তাজবিদের পরিচয়
তাজবিদ শব্দের অর্থ উত্তম বা সুন্দর করা। আল-কুরআনের আয়াতসমূহকে উত্তমরূপে বা সুন্দর ও শুদ্ধ করে পড়াকে তাজবিদ বলা হয়। অর্থাৎ আল-কুরআনের প্রতিটি হরফকে মাখরাজ ও সিফাত অনুসারে বিশুদ্ধভাবে তিলাওয়াত করাকে তাজবিদ বলে।
আরবি হরফ কোনোটি মোটা করে পড়তে হয়, আবার কোনোটি চিকন করে পড়তে হয়। উচ্চারণের এ বিশেষ অবস্থাকে বলা হয় সিফাত। যেমন: (তা) এবং (ত্বয়া) হরফ দুটির উচ্চারণের স্থান একই। কিন্তু এদের সিফাত ভিন্ন। এ দুটো হরফের মধ্যে ৬ (ত্বয়া)-কে মোটা করে পড়তে হয় এবং ৬ (তা)-কে চিকন করে পড়তে হয়। আবার মাখরাজ হলো উচ্চারণের স্থান। যেমন: ১ (হা) এবং (হা) এখানে হরফ দুটিকে ভিন্ন ভিন্ন স্থান থেকে উচ্চারণ করতে হয়। এভাবে মাখরাজ ও সিফাত ঠিক রেখে সুন্দর করে কুরআন তিলাওয়াত করাই তাজবিদ।
তাজবিদের গুরুত্ব
তাজবিদ অনুযায়ী কুরআন পড়া ওয়াজিব বা আবশ্যক। তাজবিদ অনুসারে কুরআন না পড়লে গুনাহ হয়। এতে অনেক সময় আল-কুরআনের অর্থ পরিবর্তন হয়ে যায়। আর অশুদ্ধ তিলাওয়াতের ফলে সালাতও পূর্ণাঙ্গ হয় না। যেমন: সূরা ইখলাসে এসেছে- قُلْ هُوَ اللهُ أَحَدٌ - বলুন (হে নবি)। তিনি আল্লাহ; একক ও অদ্বিতীয় এখানে শব্দের অর্থ বলুন আর যদি ৩ (ক্বাফ)-কে ভুল মাখরাজ থেকে উচ্চারণ করে বলা হয় তাহলে অর্থ বিকৃত হয়ে যায়। কেননা ওঁ শব্দের অর্থ খাও বা ভক্ষণ কর। ফলে আল-কুরআনের অর্থের বিকৃতি ঘটে। যা কোনোভাবেই জায়েজ নয়। তাজবিদ সহকারে শুদ্ধ ও সুন্দর করে কুরআন তিলাওয়াতের গুরুত্ব উল্লেখ করে আল্লাহ তায়ালা বলেন- 
وَرَتِّلِ الْقُرْآنَ تَرْتِيلاً
অর্থ: "কুরআন আবৃত্তি করো ধীরে ধীরে ও সুস্পষ্টভাবে।" (সূরা আল-মুয্যাম্মিল, আয়াত: ৪)
তাজবিদ সহকারে কুরআন পড়া আল্লাহ পাকের নির্দেশ। আর শুদ্ধরূপে কুরআন শিক্ষার মাহাত্ম্য অনেক। রাসুলুল্লাহ (স.) বলেছেন-
خَيْرُكُمْ مَنْ تَعَلَّمَ الْقُرْآنَ وَعَلَّمَهُ
'তোমাদের মধ্যে সে ব্যক্তি উত্তম যে নিজে কুরআন শিক্ষা করে এবং অপরকে তা শিক্ষা দেয়।' (বুখারি)
সুতরাং আমরা তাজবিদ সহকারে নিয়মিত কুরআন তিলাওয়াত করব।
Read more